নিজস্ব প্রতিবেদক
বর্তমান সময়ে শহর কিংবা গ্রামে ছোট পরিসরের অব্যবহৃত ঘর, ছাদ বা বারান্দাকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই স্বল্প পুঁজিতে কবুতর পালন করে বাড়তি আয় করছেন। বিশেষ করে বেকার যুবক বা গৃহিণীরা চাইলে এ পেশায় যুক্ত হয়ে সংসারে বাড়তি অবদান রাখতে পারেন।
✅ কেন কবুতর পালন করবেন?
কবুতর পালনের অন্যতম বড় সুবিধা হলো—এটি খুব একটা জায়গা চায় না। খাদ্য খরচ কম, রোগবালাই কম, আর ভালো যত্ন নিলে খুব সহজে বংশ বৃদ্ধি করে। তাছাড়া এক জোড়া কবুতর থেকে বছরে ১২-১৫টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যায়, যা বাজারে বিক্রি করে ভালো আয় করা সম্ভব।
🏠 আবদ্ধ জায়গায় কীভাবে কবুতর পালন করবেন?
১. জায়গার নির্বাচন:
আপনার বাসার ছাদ, পরিত্যক্ত রুম, বড় বারান্দা বা উঠোনে কাঠ বা টিনের খাঁচা তৈরি করে শুরু করতে পারেন। প্রতি জোড়া কবুতরের জন্য কমপক্ষে ২ ফুট বাই ২ ফুট খাঁচা রাখাই উত্তম।
২. খাঁচার গঠন:
খাঁচা যেন আলো-বাতাস চলাচল উপযোগী হয়। ভিতরে ডিম পাড়ার জন্য ছোট ছোট মাটির হাঁড়ি বা প্লাস্টিকের বাস্কেট রাখতে হবে।
৩. পরিবেশ:
খাঁচা সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। রোদ ও বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
🍚 খাবার ও যত্ন:
খাদ্য:
ধান, গম, খেসারী, ভুট্টা ও সরষে—এই ৫ মিশ্রণ (৫ শস্য) মিলে কবুতরের আদর্শ খাবার। দিনে দু’বার খাবার ও একবার পরিষ্কার পানি দিলেই চলে।
যত্ন:
সাপ্তাহিকভাবে খাঁচা পরিষ্কার, মাঝে মাঝে ভেটেরিনারি পাউডার দেওয়া, ও নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করলে কবুতর সুস্থ থাকে।
💰 আয় ও বাজার
বাচ্চা বিক্রি:
এক জোড়া কবুতর ৩০-৪০ দিনের মধ্যে ১-২টি বাচ্চা দেয়। প্রতি বাচ্চা বাজারে ২০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয় (জাত ও রঙ অনুযায়ী)। উন্নত জাতের কবুতর হলে প্রতি জোড়া ১৫০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
পুঁজির হিসাব:
প্রথমে মাত্র ৫-১০ জোড়া কবুতর দিয়ে শুরু করলেও, ৬ মাসে ৪০-৫০টি কবুতর হয়ে যায়। এতে মাসে ৫০০০-১০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় সম্ভব।
পরামর্শ:
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকেই এভাবে ঘরে বসেই সফলভাবে কবুতর পালন করছেন। উদ্যোক্তারা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও নিয়মিত যত্ন থাকলে এটি একটি লাভজনক খামার ব্যবসায় পরিণত হতে পারে।
📌 পরামর্শ:
কবুতর পালনের আগে কাছাকাছি কোনো খামারে গিয়ে অভিজ্ঞতা নেওয়া, স্থানীয় পশুসম্পদ অফিস থেকে পরামর্শ নেওয়া, ও অনলাইনে কিছু ভিডিও দেখে জ্ঞান বাড়ানো উচিত।
📝 উপসংহার:
যাদের একটু সময় ও সুষ্ঠু পরিকল্পনা আছে, তারা ঘরেই বসে কবুতর পালন করে একটি ছোট আয়ের উৎস গড়ে তুলতে পারেন। এটি যেমন আনন্দের, তেমনি আর্থিকভাবে লাভজনকও।